প্রতিদিন কি ব্যায়াম করা উচিত? ব্যায়াম করার কিছু টিপস
প্রতিদিন কি ব্যায়াম করা উচিত?
প্রতিনিয়ত নিয়ম মেনে ব্যায়াম করলে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে সুস্থ থাকা যায়। ব্যায়াম করলে শরীর সুস্থ থাকে যার ফলে রোগব্যাধি শরীরে সহজে আক্রান্ত করতে পারে না। প্রতিদিন নিয়ম মেনে ব্যায়াম করলে শরীরের পেশী শক্তিশালী হয়। যারা অতিরিক্ত খাওয়া-দাওয়া করেন তাদের শরীরে মেদ ও চর্বি জমে যায়। শরীরের বাড়তি মেদ ও চর্বি ঝরিয়ে ফেলার জন্য ব্যায়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যায়াম আপনাদের সামনে তুলে ধরলামঃ
হিপ মার্চিং ব্যায়ামঃ এই ব্যায়ামটি অনেক সহজ একটি চেয়ারে বসে দুই পা নাড়িয়ে ব্যায়ামটি করা হয়। এই ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরে বাতের ব্যথা খুব সহজে নিরাময় করা যায়। নিয়ম মেনে এই ব্যায়ামটি করলে অল্পদিনেই বাতের ব্যথা এবং শরীরের ওজন কমানো সম্ভব।
সিঙ্গেল লেগ রোমানিয়ান ডেডলিফটসঃ এই ব্যায়ামের নিয়ম হচ্ছে এক পায়ের উপর ভর করে লাফালাফি করা। নিয়মিত এই ব্যায়াম করলে শরীরের বারতি মেদ কমে যায়।
ল্যাটেরাল স্টেপ-আপঃ টুল বা মোড়ার উপর এক পা রেখে আরেক পা উপরে নিচে করে করে এই ব্যায়ামটি করা হয়।
ক্ল্যামশেল ব্যায়ামঃ এই ব্যায়াম অনেক সহজ মেঝেতে শুয়ে দুই পা ফাঁক করে আবার একসঙ্গে করে এই ব্যায়ামটি করা হয়।
সাইডস্টেপ ব্যায়ামঃ হাটুতে ভর দিয়ে একবার ডান পাশে আরেকবার বাম পাশে ঘুরে এই ব্যায়াম করতে হয়।
হিপ সার্কেলসঃ এই ব্যায়ামটি করার জন্য একটু ফাঁকা জায়গার প্রয়োজন হবে। প্রথমে বাম পা ঘোরাতে হবে এরপর ডান পা ঘুরিয়ে ব্যায়ামটি সম্পন্ন করতে হয়।
ফ্র্যাংকেনস্টেইন হাঁটাঃ মেঝেতে বসে দু পা সামনে দিকে দিয়ে হাত পায়ের কাছে নিয়ে আসতে হবে আবার পেছনের দিকে আনতে হবে।
ব্যায়াম করার সঠিক নিয়মঃ
আপনি ব্যায়াম করছেন কিন্তু ব্যায়াম যদি সঠিকভাবে না হয় তাহলে সেই ব্যায়াম কোন কাজেই আসবে না। তাই সঠিকভাবে ব্যায়াম করার নিয়ম জানা অত্যন্ত জরুরী।
- আপনার শরীরের ক্ষমতা ও বয়স অনুযায়ী কোন ব্যায়াম আপনার জন্য উপযোগী তা নির্ধারণ করা।
- প্রতিদিন ব্যায়াম করার ফলে আপনার শরীরে কোন উন্নতি হচ্ছে কিনা তা নোট করা।
- ভরা পেটে ব্যায়াম না করা। খাবার খাওয়ার কমপক্ষে ২ ঘন্টা পরে ব্যায়াম করা উচিত।
- খুব টাইট পোশাক পড়ে ব্যায়াম না করা। সবথেকে ভালো হয় ঢিলাঢালা পোশাক পরে ব্যায়াম করা।
- ব্যায়ামের শুরুতেই কঠিন কোন ব্যায়াম করা উচিত নয়।
- ব্যায়াম করার সময় স্বাভাবিকভাবে নিঃশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করুন। খুব কষ্ট হলে ব্যায়াম করা থামিয়ে দিন।
- প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটি সময় মেনে ব্যায়াম করুন।
ব্যায়াম করার পর কি করা উচিত?
ব্যায়াম শেষ করার পরপরে ভারী কোন খাবার গ্রহণ করা উচিত নয়। তবে চাইলে প্রোটিন জাতীয় কিছু খাবার গ্রহণ করা যেতে পারে। এতে করে আপনার শরীরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। সাধারণত ব্যায়াম করার পরে শরীরের ক্লান্তি চলে আসে এজন্য ফল বা ফলের রস খেয়ে নিতে পারেন। তবে দুই ঘন্টা ভারি কোন খাবার খাবেন না। অনেকেই ব্যায়াম করার পরে ফ্যানের নিচে শরীরের ঘাম শুকিয়ে নেন যা অনুচিত। ব্যায়াম শেষ করেই গোসল না করে কিছুক্ষণ সময় নিয়ে তারপর গোসল করুন।
প্রতিদিন কত ঘন্টা ব্যায়াম করা উচিত?
সব মানুষের শরীরের ধারণ ক্ষমতা একই নয়। একেক জনের শরীরের গঠন ক্ষমতা একেক রকম। গবেষকরা মতে, প্রতি ৭ দিনে আড়াই থেকে পাঁচ ঘণ্টা ব্যায়াম করা উচিত। তবে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ব্যায়াম করলে উপকারের থেকে ক্ষতি বেশি হবে। কারণ এতে করে হৃদস্পন্দন বেড়ে যাবে, খুদা বাড়বে, অস্থিরতা বাড়বে, ঘুম কম হবে, মেজাজ খিটখেটে হবে এবং শরীর অতি ক্লান্ত হয়ে যাবে। এছাড়াও অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে শরীরের ক্ষুধা বেড়ে যায় যার ফলে বেশি খাওয়ার কারণে শরীরে হরমোনের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে।
রাতে ব্যায়াম করা কি ভালো?
ব্যায়াম শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ব্যায়াম আমাদের শরীরকে সুস্থভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। এজন্য সঠিক নিয়ম মেনে এবং সঠিক সময় ব্যায়াম করা উচিত। অনেকের মতে, রাতে ব্যায়াম করা ভালো কারণ এতে করে রাতের ঘুম ভালো হয়। আবার অনেকের মতে রাত্রে ব্যায়াম করা উচিত নয় কারণ এতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এখন আপনি নিজেই বেছে নিন আপনি রাত্রে ব্যায়াম করবেন নাকি দিনে ব্যায়াম করবেন।
সপ্তাহে কয়দিন ব্যায়াম করা উচিত?
বাস্তব হলেও সত্য সপ্তাহে দুই থেকে এক দিন জিমে গিয়ে কোন লাভ নেই। আশানুরূপ ফলাফল পেতে সপ্তাহে কমপক্ষে চার থেকে পাঁচ দিন আপনাকে জিমে যেতে হবে এবং প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট আপনাকে ব্যায়াম করতে হবে।