কিভাবে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা যায়? পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাওয়ার ৮টি টিপস

কিভাবে পরীক্ষায় A+ পাওয়া যায়


পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার কৌশল?

পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেতে হলে আপনাকে পরীক্ষার খাতা স্বচ্ছ, নির্ভুল এবং মার্জিন থাকা অতীব জরুরী। খাতার মধ্যে কোন ধরনের কাটাকাটি, ঘষাঘষি করা যাবে না। খাতায় কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে নির্ভুল লিখতে হবে। বেশি ঘষামাজা করলে খাতা সৌন্দর্য হারায় এবং স্যারেরা বিরক্ত বোধ করে। পরীক্ষার খাতায় প্রশ্নের উত্তর সাজিয়ে গুছিয়ে লিখলে এবং নির্দিষ্ট মার্জিন এর মধ্যে রাখলে লেখা অনেক সুন্দর দেখায় এতে করে ভালো নম্বর পেতে সহজ হয়।

কিভাবে লিখলে পরীক্ষায় ভালো করা যায়?

পরীক্ষায় ভালো করার জন্য পরীক্ষার প্রশ্ন হাতে পাওয়ার সাথে সাথেই ভালোভাবে পড়তে হবে। এতে করে সহজে সুন্দরভাবে উত্তর দেয়া যায়। পরীক্ষার খাতায় স্কেল দিয়ে দাগ দেয়ার সময় খাতার উপরে এবং বাম পাশে এক স্কেল পরিমাণ জায়গা টানতে হবে। কোন প্রশ্নের উত্তর ভুল হলেও যেন খাতাটি পরিষ্কার থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রশ্ন পাওয়ার পর প্রথমে যেসব প্রশ্ন কমন পড়েছে সেসবের উত্তর দিতে হবে। কোনক্রমেই কোন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে পরীক্ষার হল থেকে বেরোনো যাবে না। পরীক্ষায় ভালো করতে হলে অবশ্যই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আসতে হবে। পরীক্ষার খাতার সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সবুজ, নীল রঙের কলম দিয়ে মার্জিন টানতে পারেন এসব মেনে আত্মবিশ্বাসের সাথে পরীক্ষা দিলে অটোমেটিক্যালি পরীক্ষা ভালো করা যাবে।

কিভাবে পরীক্ষায় A+ পাওয়া যায়?

পরীক্ষায় এ প্লাস পেতে হলে তোমাকে অবশ্যই শুরু থেকেই সময়কে কাজে লাগাতে হবে। সময় মতো সব মেনে চললে তুমি এ প্লাস অবশ্যই পাবে। প্রতিদিন রুটিন মাফিক পড়াশোনা করতে হবে। পড়াশোনায় কখনো গ্যাপ দেওয়া যাবে না নিয়মিত স্কুল বা কলেজের ক্লাস করতে হবে। ভালো বন্ধুদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে দিতে হবে। তোমাকে এমন বন্ধুবান্ধব বেছে নিতে হবে যাদের এ প্লাস বা গোল্ডেন পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কেননা তাদের সঙ্গে মিশলে তুমিও এ প্লাস বা গোল্ডেন পেতে তোমার আগ্রহ বেড়ে যাবে অনেক বেশি।

একটি প্রশ্নের জন্য কত পৃষ্ঠা লিখতে হবে ?

একটি প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করে প্রশ্নের গঠনের উপর। অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর ১ থেকে ২ লনের মধ্যে দিতে হয় অথবা এক মিনিট সময়ের মধ্যে দিতে হয়। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর ৫ থেকে ৬ লাইন লিখতে হয় এবং রচনামূলক প্রশ্নের উত্তর ১২ থেকে ১৫ লাইনে লিখতে হয়। এর বেশি দেয়ার প্রয়োজন হয় না।

সৃজনশীল প্রশ্ন কত পৃষ্ঠা লিখতে হয়?

সৃজনশীল প্রশ্নের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই, জ্ঞান মূলক প্রশ্নের জন্য ১-২ লাইন লিখলেই যথেষ্ট। অনুধাবন প্রশ্নের জন্য ৩-৪ লাইন বা দুটি প্যারা আর প্রয়োগমূলক প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্য তিনটি প্যারা বা ৫-৬ লাইন লিখতে হয় এবং উচ্চতার দক্ষতা মূলক প্রশ্নের উত্তরে চারটি প্যারা বা ৮-৯ লাইন লিখলেই যথেষ্ট।

ভাবসম্প্রসারণ কত পৃষ্ঠা লিখতে হয়?

ভাব সম্প্রসারণ বলতে আমরা বুঝি ভাবের সম্প্রসারণ অর্থাৎ কোন পদ্য বা কবিতার মূলভাব ফুটিয়ে তোলা। ভাবসম্প্রসারণ মূলত ১৩ থেকে ১৪ লাইনের হয়ে থাকে। এই ১৩ থেকে ১৪ লাইনের মধ্যেই কোন একটি বিষয়ের মূল ভাবকে ফুটিয়ে তুলতে হয়। কোন সংক্ষিপ্ত কবিতার অংশকে বিশদভাবে আলোচনা করাই ভাবসম্প্রসারণের মূল কাজ। এই বিশদ আলোচনার মধ্যে অবশ্যই প্রয়োজনীয় সব কথাবার্তা থাকে। অপ্রয়োজনীয় বিষয় এতে স্থান পায় না।

না পড়ে পরীক্ষায় পাশ করার উপায়?

অনেক সময় পরীক্ষায় না পড়েও পাশ করা সম্ভব হয়ে ওঠে। পরীক্ষায় পাশ করতে হলে অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত হতে হবে। ক্লাসে ভালো বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে ওঠাবসা করতে হবে এতে করে আপনার পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ জন্মাবে এবং অনেক কিছুই শিখতে পাবেন ভালো বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে। ক্লাসে নিয়মিত হলে স্যারের লেকচার শুনতে শুনতে এক সময় আপনিও ক্লাসে মনোযোগী হতে পারবেন। নিয়মিত উপস্থিত থাকলে আপনার দ্বারা ভালো রেজাল্ট সম্ভব না হলেও পাস করা সম্ভব। পাস করতে হলে বেশি পড়তে হয় না ক্লাসে নিয়মিত থাকলেই যথেষ্ট।

এসএসসি পরীক্ষায় ভালো করার উপায়?

জেএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে হলে আপনাকে অষ্টম শ্রেণীতে ওঠা মাত্রই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। শুরু থেকে নিজেকে রুটিন মাফিক পড়াশোনায় এগিয়ে নিতে হবে। নিয়মিত ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা সময় পড়ার জন্য ব্যয় করতে হবে। স্কুলে নিয়মিত হতে হবে। স্যারদের সঠিক দিক নির্দেশনা পেলে আপনি সহজে জেএসসিতে ভালো রেজাল্ট করতে পারবেন যদি মেনে চলেন স্যারদের দেখানো পথ। পড়াশোনা করার জন্য আপনাকে গোছগাছ রুমে পড়াশোনা করতে হবে কেননা সুন্দর পরিবেশ পড়াশোনায় মনোযোগী করে তোলে। প্রতিটি ক্লাসে যা শিখবেন তা নোট করে রেখে দিতে পারেন। এটি পরীক্ষার সময়ে ভীষণ কাজে দেবে। প্রয়োজনে আপনি অতিরিক্ত জানার জন্য অনলাইন থেকেও পড়াশোনার বিষয়ে তথ্য নিতে পারেন। এতে করে আপনার জন্য অনেক ভালো হবে।

অল্প সময়ে পরীক্ষায় ভালো করার উপায়? পরীক্ষার খাতায় ভালো নম্বর পাওয়ার ৮ উপায়ঃ

১) সহজ প্রশ্নের উত্তর সবার আগেঃ পরীক্ষার প্রশ্ন হাতে পাওয়া মাত্রই সহজ প্রশ্নগুলো আগে দেয়ার চেষ্টা করবে। যে প্রশ্নটা তোমার কাছে খুব পরিচিত তুমি ভালোভাবে লিখতে পারবে সেটি আগে দেয়ার চেষ্টা করবে। এতে করে স্যারদের তোমার প্রতি ভালো ধারণা তৈরি হবে। যেসব প্রশ্নের উত্তর একটু কম পারবে সেসব প্রশ্নের উত্তর শেষে দেয়ার চেষ্টা করবে।

২) কোন প্রশ্ন বাদ দেওয়া যাবে নাঃ পরীক্ষার হলে ঢোকার পর পরীক্ষার প্রশ্ন ভালোভাবে পড়ে নেবে। প্রশ্নে যতটি উত্তর দিতে বলা হয়েছে সব কটির উত্তর দিতে হবে। কোনক্রমে কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে আসা যাবে না। প্রশ্নের উত্তর সব এটেন্ড করলে তুমি অবশ্যই ভালো মার্কস পাবে। যেসব প্রশ্নের উত্তর তুমি খুব ভালো দিতে পারবে বলে মনে হবে সেসব প্রশ্নের উত্তর আগে দিবে আর যে সবে তোমার কনফিউশন থাকবে সে সব উত্তর শেষে লিখবে এতে করে স্যারদের সুদৃষ্টি পড়বে তোমার খাতায়।

৩) প্রশ্নপত্র ভালোভাবে বুঝাঃ পরীক্ষায় ভালো করার একটি বড় বিষয় হচ্ছে প্রশ্নপত্র ভালোভাবে পড়ে নেয়া। আমাদের অনেকের মধ্যে দেখা যায় প্রশ্নের উত্তর কমন পড়ার পরও পরীক্ষায় ভালো করতে না পারা। এর মূল কারণ হচ্ছে প্রশ্নটি ভালোভাবে না বুঝে উত্তর লেখা শুরু করা। প্রশ্ন পাওয়া মাত্রই একটু সময় নিয়ে প্রশ্নটি ভালোভাবে দেখতে হবে, খুব ঠান্ডা মাথায় প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় প্রশ্ন কমন পড়ার ফলে আমরা বেশি উত্তেজিত হয়ে যাই এবং উত্তেজিত হয়ে অনেক প্রশ্নের উত্তর না লিখেই চলে আসি। এমনটা কখনোই করা যাবে না।

৪) বিভিন্ন রঙের কলম ব্যবহারঃ পরীক্ষায় ভালো করার আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে পরীক্ষার খাতায় বিভিন্ন রঙের কলমের কালি ব্যবহার করা। পরীক্ষার খাতায় মার্জিন টানতে নীল অথবা সবুজ রঙের কলমের কালি ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে খাতার সৌন্দর্য অনেক বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন প্যারা লেখার সময় প্যারার আন্ডারলাইন করতেও এসব রংবেরঙের কালি দিয়ে লিখলে অনেক সুন্দর দেখায় পরীক্ষার খাতা সুন্দর এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে স্যারেরা মার্ক দিতে কার্পণ্য করেনা। এতে ভালো মার্কস পাওয়া যায়।

৫) প্যারা করে লেখাঃ পরীক্ষার খাতায় উত্তর লেখার সময় আমাদের প্যারা আকারে লিখতে হবে। প্রতিটি প্যারা তিন থেকে চার লাইন করে রাখা উচিত। প্যারা করে রাখলে লেখাগুলো সুশৃংখল ও পরিপাটি দেখায়। সংক্ষিপ্ত ও রচনামূলক প্রশ্নের উত্তর আমরা প্যারা আকারে লিখতে পারি। প্যারা করে লিখলে স্যারদের মার্ক দিতে সহজ হয় 

৬) সময়ের দিকে লক্ষ্য রাখাঃ পরীক্ষার হলে প্রশ্ন পাওয়া মাত্রই সময়ের দিকে লক্ষ্য রেখে পরীক্ষা দিতে হবে। প্রতিটি প্রশ্নের জন্য নির্দিষ্ট করে সময় ভাগ করে নিতে হবে। যেমন একটি সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য ২০ থেকে ২৫ মিনিট করে সময় বরাদ্দ করবে। জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তর এক মিনিট সময়ের মধ্যে কভার করতে হবে। অনুধাবনের জন্য তিন মিনিট। প্রয়োগমূলক প্রশ্নের জন্য ছয় মিনিট এবং উচ্চতর দক্ষতা মূলক প্রশ্নের জন্য ১০ মিনিট সময় রাখতে হবে। এইভাবে সময় মেইনটেন করে পরীক্ষা দিলে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব।

৭) লুজ শিট নেয়ার প্রতিযোগিতাঃ পরীক্ষার হলে আমরা প্রায় লক্ষ্য করি অনেকেই গাদা গাদা লুজ শিট নিয়ে থাকে। তুমি যদি কোন প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে দিয়ে থাকো সেটিতে অল্প পরিমাণ লিখেও ভালো নম্বর তোলা সম্ভব। কিন্তু তোমার যদি উত্তর সঠিক না হয় এবং গাদা গাদা লুজ শিট নিয়ে খাতা ভরে রাখো তাহলে কোন লাভ হবে না। কারণ স্যারেরা খাতায় বেশি বেশি লেখা দেখবে না স্যারেরা দেখবে সঠিক উত্তর। তাই বেশি বেশি লুজ শিট নেয়ার প্রতিযোগিতায় তোমার নামার দরকার নেই। 

৮) সহজ প্রশ্নের উত্তর সব আগেঃ পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাওয়ার জন্য পরীক্ষার হলে ঢুকে প্রশ্ন পাওয়া মাত্রই আমাদের সবার চোখ যায় কোন প্রশ্নটি কমন পড়ছে সেটির দিকে। আমাদের উচিত যেটি কমন পড়েছে সেটি আগে লেখা। পর্যায়ক্রমে সহজ থেকে লেখা উচিত। কঠিন প্রশ্নের উত্তর গুলো সবার শেষে দিতে হবে। স্যার যখন খাতা কাটবেন প্রথমের দিকে ভালো লেখা দেখে স্যার বেশি বেশি মার্ক দিবেন। 

আত্মবিশ্বাসঃ সব কথার বড় কথা হচ্ছে আত্মবিশ্বাস। আত্মবিশ্বাস থাকলে যে কোন পরীক্ষাতেই ভালো করা সম্ভব। নিজের উপর নিজের আত্মবিশ্বাস অবশ্যই রাখতে হবে। নিজেকে বলতে হবে আমি পারবো অবশ্যই পারবো ভালো কিছু করতে। কিন্তু নিজে নিজে যদি ভেঙে পড় তাহলে কখনোই ভালো কিছু করা সম্ভব না। পরীক্ষার আগে অবশ্যই নিজের ওপর ভরসা রেখে আত্মবিশ্বাস রেখে পরীক্ষা দিতে হবে। পরীক্ষার সব নিয়ম কানুন মেনে সাহস রেখে পরীক্ষা দিলে অবশ্যই পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব হবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url